অনেক জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমসমূহের মুনাফার হার পুনঃনির্ধারণপূর্বক খানিকটা যৌক্তিকীকরণ হয়েছে ৩০ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখের প্রজ্ঞাপন মারফত । জাতীয় সঞ্চয় স্কিমসমূহের/ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর)।
ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব – এ ৪টি স্কীমের মুনাফা হার অপরিবর্তিত থাকবে ।
Table of Contents
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার
২৩ মে, ২০১৫ তারিখের সর্বশেষ জাতীয় সঞ্চয় স্কিমসমূহের/ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারে বড় পরিবর্তন আনে সরকার সামাজিক সুরক্ষার বিষয় এবং বাজারে প্রচলিত মুনাফা/সুদ বিবেচনায় ঠিক করা হয়েছিল মুনাফার হার ।
এরপর মার্কেটে সুদহার সর্বেোচ্চ ৬% বেঁধে দিলেও সঞ্চয় স্কিমসমূহের/ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারে বড় পরিবর্তন আসেনি । বিত্তবানদের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিয়েও সমালোচনা ছিল অনেকদিন ধরেই ।

৩০ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখের তারিখের প্রজ্ঞাপন অনুসারে, ‘জুলাই-ডিসেম্বর’, ২০২৫ সময়কালের জন্য বিনিয়োগের শ্রেণিসীমার
ভিত্তিতে দুই ধাপে (৭.৫০ লক্ষ টাকা ও এর নিম্নে এবং ৭.৫০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে নিম্নরূপভাবে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। তবে স্কিমে মুনাফার হার কমিয়েছে সরকার। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বড় বিনিয়োগকারীদের মুনাফার হার কিছুটা যৌক্তিক পরিমাণে কমানো হয়েছে।
‘জাতীয় সঞ্চয় স্কীম’ এর আওতায় ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট
বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব – এ ৪টি স্কীমের মুনাফা হার অপরিবর্তিত থাকবে ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নতুন করে যারা সঞ্চয়পত্র কিনবেন শুধু তাদের জন্য পরিবর্তিত এই হার কার্যকর হবে।
এ ছাড়া আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি পুনরায় বিনিয়োগ করলে তখন নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয়ের জন্যই নতুন এই মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে।
এ আদেশ জারি হওয়ার ০৬ (ছয়) মাস পর জাতীয় সঞ্চয় স্কীম-এ বিনিয়োগের মুনাফার হার পুনরায় নির্ধারণ করা হবে ।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র (প্রবর্তনঃ ১৯৭৭ খ্রিঃ)
মূল্যমানঃ ১০ টাকা; ৫০ টাকা; ১০০ টাকা; ৫০০ টাকা; ১,০০০ টাকা; ৫,০০০ টাকা; ১০,০০০ টাকা; ২৫,০০০ টাকা; ৫০,০০০ টাকা; ১,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ টাকা; ১০,০০,০০০ টাকা; ২৫,০০,০০০ টাকা।
কোথায় পাওয়া যায়ঃ জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক এর শাখাসমূহ, তফসিলি ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে ক্রয় ও নগদায়ন করা যায়।
মেয়াদঃ ৫ (পাঁচ) বছর।
মুনাফার হারঃ
ক্রমিক নং | সঞ্চয় স্কিমের নাম | মেয়াদ (উত্তীর্ণ হইলে) | ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত | ৭,৫০,০০১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব |
পুনঃনির্ধারিত মুনাফার হার (%) | ||||
৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র | ১ম বছরান্তে | ০৯.৭৪% | ০৯.৭২% | |
২য় বছরান্তে | ১০.২১% | ১০.১৯% | ||
৩য় বছরান্তে | ১০.৭২% | ১০.৭০% | ||
৪র্থ বছরান্তে | ১১.২৬% | ১১.২৩% | ||
৫ম বছরান্তে | ১১.৮৩% | ১১.৮০% |
মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়ন করলে উপর্যুক্ত ছকে উল্লিখিত হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধিত হয়ে থাকলে তা মূল টাকা হতে কর্তন করে সমন্বয়পূর্বক অবশিষ্ট মূল টাকা পরিশোধ করা হবে।
উৎসে করঃ ৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩-মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ৫% হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ১০% হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।
যারা ক্রয় করতে পারবেনঃ
(ক) সকল শ্রেণি ও পেশার বাংলাদেশী নাগরিক;
(খ) আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ (অংশ-২) এর বিধি ৪৯-এর উপ-বিধি (২) এ সংজ্ঞায়িত স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল এবং ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ এর ১৯ নং) অনুযায়ী পরিচালিত ভবিষ্য তহবিল;
(গ) আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ৬ষ্ঠ তফসিল এর পার্ট এ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী মৎস্য খামার, হাঁস-মুরগীর খামার, পেলিটেড পোল্ট্রি ফিডস উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপণন, গবাদি পশুর খামার, দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, উদ্যান খামার প্রকল্প, রেশম গুটিপোকা পালনের খামার, ছত্রাক উৎপাদন এবং ফল ও লতাপাতার চাষ হতে অর্জিত আয়-যা সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনার কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত।
(ঘ) অটিস্টিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ অটিস্টিকদের সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান। তবে, শর্ত থাকে যে, প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা অবশ্যই অটিস্টিকদের সহায়তায় ব্যবহার করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত হতে হবে।
(ঙ) দুঃস্থ ও অনাথ শিশুদের নিবন্ধিত আশ্রয় প্রতিষ্ঠান (অনাথ আশ্রম, শিশু পরিবার, এতিমখানা ইত্যাদি)।
(চ) প্রবীণদের জন্য নিবন্ধিত আশ্রয় কেন্দ্র।
ক্রয়ের ঊর্ধ্বসীমাঃ
(ক) ব্যক্তির ক্ষেত্রেঃ একক নামে ৩০ লক্ষ অথবা যুগ্ম-নামে ৬০ লক্ষ টাকা;
(খ) প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেঃ ভবিষ্য তহবিলে মোট স্থিতির ৫০%, তবে সর্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকা;
(গ) ফার্মের ক্ষেত্রেঃ সর্বোচ্চ ২(দুই) কোটি টাকা।
(ঘ) অটিস্টিক সহায়ক প্রতিষ্ঠান, দুঃস্থ ও অনাথ শিশুদের নিবন্ধিত আশ্রয় প্রতিষ্ঠান (অনাথ আশ্রম, শিশু পরিবার, এতিমখানা ইত্যাদি) এবং প্রবীণদের জন্য নিবন্ধিত আশ্রয় কেন্দ্রের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫(পাঁচ) কোটি টাকা।
অন্যান্য সুবিধাঃ
(ক) নমিনি নিয়োগ করা যায়;
(খ) সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সাথে সাথেই অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণের পর সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করতে পারেন।
তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র (প্রবর্তনঃ ১৯৯৮ খ্রিঃ)
মূল্যমানঃ ১,০০,০০০ টাকা; ২,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ ও ১০,০০,০০০ টাকা।
কোথায় পাওয়া যায়ঃ জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে ক্রয় ও নগদায়ন করা যায়।
মেয়াদঃ ৩ (তিন) বছর।
মুনাফার হারঃ
ক্রমিক নং | সঞ্চয় স্কিমের নাম | মেয়াদ (উত্তীর্ণ হইলে) | ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত | ৭,৫০,০০১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব |
পুনঃনির্ধারিত মুনাফার হার (%) | ||||
৩-মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র | ১ম বছরান্তে | ১০.৬৫% | ১১.৬০% | |
২য় বছরান্তে | ১১.২২% | ১১.১৬% | ||
৩য় বছরান্তে | ১১.৮২% | ১১.৭৭% |
মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়ন করলে উপর্যুক্ত ছকে উল্লিখিত হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধিত হয়ে থাকলে তা মূল টাকা হতে কর্তন করে সমন্বয়পূর্বক অবশিষ্ট মূল টাকা পরিশোধ করা হবে।
উৎসে করঃ ৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩-মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ৫% হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ১০% হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।
যারা ক্রয় করতে পারবেনঃ
(ক) সকল শ্রেণি ও পেশার বাংলাদেশী নাগরিক;
(খ) আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ (অংশ-২) এর বিধি ৪৯-এর উপ-বিধি (২) এ সংজ্ঞায়িত স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল এবং ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ এর ১৯ নং) অনুযায়ী পরিচালিত ভবিষ্য তহবিল;
(গ) আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ৬ষ্ঠ তফসিল এর পার্ট এ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী মৎস্য খামার, হাঁস-মুরগীর খামার, পেলিটেড পোল্ট্রি ফিডস উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপণন, গবাদি পশুর খামার, দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, উদ্যান খামার প্রকল্প, রেশম গুটিপোকা পালনের খামার, ছত্রাক উৎপাদন এবং ফল ও লতাপাতার চাষ হতে অর্জিত আয়-যা সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনার কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত।
(ঘ) অটিস্টিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ অটিস্টিকদের সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান। তবে, শর্ত থাকে যে, প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা অবশ্যই অটিস্টিকদের সহায়তায় ব্যবহার করতে হবে এবংপ্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত হতে হবে।
(ঙ) দুঃস্থ ও অনাথ শিশুদের নিবন্ধিত আশ্রয় প্রতিষ্ঠান (অনাথ আশ্রম, শিশু পরিবার, এতিমখানা ইত্যাদি)।
(চ) প্রবীণদের জন্য নিবন্ধিত আশ্রয় কেন্দ্র।
ক্রয়ের ঊর্ধ্বসীমাঃ
(ক) ব্যক্তির ক্ষেত্রেঃ একক নামে ৩০ লক্ষ অথবা যুগ্ম-নামে ৬০ লক্ষ টাকা;
(খ) প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেঃ ভবিষ্য তহবিলে মোট স্থিতির ৫০%, তবে সর্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকা;
(গ) ফার্মের ক্ষেত্রেঃ সবোর্চ্চ ২(দুই) কোটি টাকা।
(ঘ) অটিস্টিক সহায়ক প্রতিষ্ঠান, দুঃস্থ ও অনাথ শিশুদের নিবন্ধিত আশ্রয় প্রতিষ্ঠান (অনাথ আশ্রম, শিশু পরিবার, এতিমখানা ইত্যাদি) এবং প্রবীণদের জন্য নিবন্ধিত আশ্রয় কেন্দ্রের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫(পাঁচ) কোটি টাকা।
অন্যান্য সুবিধাঃ
(ক) ত্রৈমাসিকভিত্তিতে মুনাফা প্রদেয়।
(খ) নমিনি নিয়োগ করা যায়।
(গ) সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সাথে সাথেই সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করে টাকা উত্তোলন করতে পারেন অথবা মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত যথারীতি প্রতি তিন (৩)মাস অন্তর মুনাফা উত্তোলন করতে পারেন।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র
পেনশনার সঞ্চয়পত্র (প্রবর্তনঃ ২০০৪ খ্রিঃ)
মূল্যমানঃ ৫০,০০০ টাকা; ১,০০,০০০ টাকা; ২,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ ও ১০,০০,০০০ টাকা।
কোথায় পাওয়া যায়ঃ জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে ক্রয় ও নগদায়ন করা যায়।
মেয়াদঃ ৫ (পাঁচ) বছর।
মুনাফা হারঃ
ক্রমিক নং | সঞ্চয় স্কিমের নাম | মেয়াদ (উত্তীর্ণ হইলে) | ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত | ৭,৫০,০০১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব |
পুনঃনির্ধারিত মুনাফার হার (%) | ||||
পেনশনার সঞ্চয়পত্র | ১ম বছরান্তে | ০৯.৮৪% | ০৯.৭২% | |
২য় বছরান্তে | ১০.৩২% | ১০.১৯% | ||
৩য় বছরান্তে | ১০.৮৪% | ১০.৭০% | ||
৪র্থ বছরান্তে | ১১.৩৯% | ১১.২৩% | ||
৫ম বছরান্তে | ১১.৯৮% | ১১.৮০% |
মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়ন করলে উপর্যুক্ত ছকে উল্লিখিত হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধিত হয়ে থাকলে তা মূল টাকা হতে কর্তন করে সমন্বয়পূর্বক অবশিষ্ট মূল টাকা পরিশোধ করা হবে।
উৎসে করঃ পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর কোন উৎসে কর কর্তন করা হয় না। ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকার অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ১০% হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।
যারা ক্রয় করতে পারবেনঃ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী, সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত মাননীয় বিচারপতিগণ, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী/স্ত্রী/সন্তান।
ক্রয়ের ঊর্ধ্বসীমাঃ প্রাপ্ত আনুতোষিক (Gratuity) ও ভবিষ্য তহবিলের অর্থ (চূড়ান্ত) মিলিয়ে একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা।
অন্যান্য সুবিধাঃ
(ক) প্রতি মাসে মুনাফা প্রদেয়;
(খ) নমিনি নিয়োগ করা যায়;
(গ) সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সাথে সাথেই অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণের পর সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করতে পারেন।
পরিবার সঞ্চয়পত্র
পরিবার সঞ্চয়পত্র (প্রবর্তনঃ ২০০৯ খ্রিঃ)
মূল্যমানঃ ১০,০০০ টাকা; ২০,০০০ টাকা; ৫০,০০০ টাকা; ১,০০,০০০ টাকা; ২,০০,০০০ টাকা; ৫,০০,০০০ টাকা এবং ১০,০০,০০০ টাকা।
কোথায় পাওয়া যায়ঃ জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে ক্রয় ও নগদায়ন করা যায়।
মেয়াদঃ ৫ (পাঁচ) বছর।
মুনাফা হারঃ
ক্রমিক নং | সঞ্চয় স্কিমের নাম | মেয়াদ (উত্তীর্ণ হইলে) | ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত | ৭,৫০,০০১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব |
পুনঃনির্ধারিত মুনাফার হার (%) | ||||
পরিবার সঞ্চয়পত্র | ১ম বছরান্তে | ০৯.৮১% | ০৯.৭২% | |
২য় বছরান্তে | ১০.২৯% | ১০.১৯% | ||
৩য় বছরান্তে | ১০.৮০% | ১০.৭০% | ||
৪র্থ বছরান্তে | ১১.৩৫% | ১১.২৩% | ||
৫ম বছরান্তে | ১১.৯৩% | ১১.৮০% |
মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়ন করলে উপর্যুক্ত ছকে উল্লিখিত হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধিত হয়ে থাকলে তা মূল টাকা হতে কর্তন করে সমন্বয়পূর্বক অবশিষ্ট মূল টাকা পরিশোধ করা হবে।
উৎসে করঃ ৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩-মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ৫% হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার উপর ১০% হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।
যারা ক্রয় করতে পারবেনঃ
(ক) ১৮ (আঠার) ও তদুর্ধ্ব বয়সের যে কোন বাংলাদেশী মহিলা;
(খ) যে কোন বাংলাদেশী শারীরিক প্রতিবন্ধী (পুরুষ ও মহিলা) এবং
(গ) ৬৫ (পঁয়ষট্টি) ও তদুর্ধ্ব বয়সের যে কোন বাংলাদেশী (পুরুষ ও মহিলা) নাগরিক।
ক্রয়ের ঊর্ধ্বসীমাঃ একক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) লক্ষ টাকা।
অন্যান্য সুবিধাঃ
(ক) মাসিকভিত্তিতে মুনাফা প্রদেয়;
(খ) নমিনি নিয়োগ / পরিবর্তন ও বাতিল করা যায়;
(গ) সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সাথে সাথেই সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করে টাকা উত্তোলন করতে পারেন অথবা মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত যথারীতি মাসে মাসে মুনাফা উত্তোলন করতে পারেন।
বিঃদ্রঃ ৫ (পাঁচ) বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩-মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রে সমন্বিতভাবে একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা অথবা যুগ্মনামে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা যাবে। উল্লেখ্য যে, পরিবার সঞ্চয়পত্র যৌথ নামে ক্রয় করা যায় না।
ডাকঘর সঞ্চয়পত্র
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে মুনাফার হারে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এই স্কিমের মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে তিন বছর মেয়াদি হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তবে নতুন নিয়মে এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার হবে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে হবে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।
ওয়েজ আর্নার’স ডেভলপমেন্ট ফান্ড
ওয়েজ আর্নার’স ডেভলপমেন্ট ফান্ডের বর্তমান মুনাফার হার ১১ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে নতুন হারে ১৫ লাখের বেশি বিনিয়োগ করলে মুনাফা মিলবে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর ৩০ লাখের বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাওয়া যাবে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ ছাড়া বিনিয়োগ ৫০ লাখের বেশি হলে ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যাবে।
ট্রেজারী বন্ড সম্পর্কে জানতে এখানে ঘুরে আসুন
কাদের সুবিধা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সমন্বয়ের ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান/পক্ষ সুবিধা উপভোগ করবে । নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ
- প্রধান সুবিধাভোগী সরকার, সরকারের সুদ ব্যয় হ্রাস পাবে এই নতুন হার প্রয়োগ হলে ।
- শেয়ার মার্কেট কিছুটা বেশি বিনিয়োগ পাবে এই মুনাফা হার ও বিনিয়োগসীমা বাস্তবায়িত হলে ।
- উদ্যোক্তা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটোর সম্ভাবনা রয়েছে ।
সমস্যা কাদের জন্য
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সমন্বয়ের ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান/পক্ষ সমস্যার সম্মুখীন হবে । নিচে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ
- বয়স্করা চিকিৎসা ও বর্ধিত জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে হিমসিম খাবেন।
- মধ্যবিত্তরা সম্মানজনক জীবনধারণে সমস্যায় পড়বে।
- পেনশনের টাকায় চলতে বাড়তি চাপ আসবে।
- একাধিক আয়ের উৎস নেই এমন মানুষেরা চাপে পড়বেন।
- ঝুকিপূর্ণ বিনিয়োগের মাধ্যমে অনেকেই শেষ সম্বল/মূলধন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবেন।
জেনে রাখা জরুরি
- এখন থেকে মোট ১৫ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের সঞ্চয়পত্র, ওয়েজ আর্নাস ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ডাকঘর সঞ্চয়-মেয়াদী হিসাব এর ক্ষেত্রে কমছে মুনাফার হার। আজকে থেকে চালু হওয়া স্কিমের ক্ষেত্রে এই হার প্রযোজ্য হবে।
- মোট ১৫ লক্ষ টাকার কম মূল্যের উক্ত সঞ্চয় স্কিমসমূহ ক্রয়ের ক্ষেত্রে আগের মুনাফার হার প্রাপ্ত হবেন। অর্থাৎ ১৫ লক্ষ টাকার পর্যন্ত জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের ক্ষেত্রে মুনাফার হার কমানো হয়নি।
- আজকের পূর্বে যে সঞ্চয় স্কিম কেনা হয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে পূর্বের রেটের মুনাফা প্রাপ্ত হবেন এবং মেয়াদান্তেও পূর্বের রেটে মুনাফা পাওয়া যাবে।
- গতকাল পর্যন্ত যার ১৫ লক্ষ টাকার সঞ্চয় স্কিম ছিল, তিনি যদি আর কোনো সঞ্চয় স্কিম না কেনেন, তাহলে তিনি ক্রয়কালীন হারে মুনাফা পাবেন। কিন্তু তিনি যদি এরপর যেকোনো এমাউন্টের সঞ্চয় স্কিম কিনেন, তাহলে তার নতুন সব বিনিয়োগের উপর নতুন মুনাফা হার প্রযোজ্য হবে।
- ইতোমধ্যে যাদের ১৫ লক্ষ টাকার উপর সঞ্চয় স্কিম আছে, তারা যদি নতুন করে সঞ্চয় স্কিম না কিনেন, তারাও ক্রয়কালীন হারে মুনাফা পাবেন।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের ইতিহাস
আজকের সঞ্চয় প্রকল্প তথা সঞ্চয়ের অতীত ইতিহাস সর্ম্পকে যতদূর জানা যায়, সঞ্চয় ব্যাংকের জনক হিসেবে খ্যাত রেভারেন্ড হেনরি ডানকান ১৮১০ খ্রিষ্টাব্দে স্কটল্যান্ডের এক গীর্জায় প্রখম সঞ্চয় ব্যাংক স্থাপন করেন। ইংল্যান্ডে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ৬৫ বছর পূর্বে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারিভাবে ‘জাতীয় সঞ্চয় সংস্থা’ আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বযুদ্ধের পর জাতীয় সঞ্চয় সংস্থা ইংল্যান্ডের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। জনগণকে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এ উপমহাদেশে ১৯৪৪ সালে ভারতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সর্বপ্রথম ‘জাতীয় সঞ্চয় সংস্থা’ কাজ শুরু করে। এ সংস্থার প্রধান কার্যালয় ভারতের সিমলায় অবস্থিত ছিল।
অতঃপর ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর জাতীয় সঞ্চয়ের কার্যক্রম তদানীন্তন সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানান্তরিত হয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
তারপর র্দীঘ ৪২ বছর পর জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তর ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে অধিদপ্তরে উন্নীত হয়। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধিনস্থ একটি অধিদপ্তর।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের উদ্দেশ্যসমূহঃ-
- জনগণকে সঞ্চয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা;
- বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় জাতীয় সঞ্চয় স্কীমের মাধ্যমে আহরণ করা;
- সঞ্চয় স্কীমের মাধ্যমে আহরিত অর্থ দ্বারা জাতীয় বাজেট ঘাটতি পূরণ করা;
- জাতীয় সঞ্চয় স্কীমের মাধ্যমে দেশের বিশেষ বিশেষ জনগোষ্ঠী যেমন- মহিলা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী, বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক,প্রবাসী বাংলাদেশীএবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনয়ন;
- বৈদেশিক নির্ভরতা হ্রাস এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করা ইত্যাদি।